Search This Blog

Home » »

বাংলাদেশে আইএসআইএস এর ভয়াবহ তৎপরতা; ৩৬০ জন আইএস জঙ্গি ঢুকেছে দেশে !

is

চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে সারাদেশে বড় ধরনের সহিংসতা ঘটিয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত করে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে বাংলাদেশে ব্যাস্ত সময় কাটাচ্ছিল মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আন্তজার্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়ার (আইএসআইএস)!।বাংলাদেশের ‘সমন্বয়ক’সহ চার জঙ্গিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে দেশব্যাপী বোমা হামলার পরিকল্পনা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ডিবি।
তাদের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (ভিভিআইপি) ওপর হামলা। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসহ মন্ত্রী-এমপিদের স্ত্রী-সন্তানও রয়েছে তাদের টার্গেটে।
এ ছাড়া সচিবালয়সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও পেট্রোলপাম্পে বোমা হামলা চালানোর ঘৃণ্য পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে জামায়াত-শিবিরকে সহযোগিতা করে ঢাকাকে অকার্যকর করার পরিকল্পনা করছে জঙ্গিরা। আইএস এর শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের সহযোগিতায় দেশীয় জঙ্গি সংগঠন জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ও হিযবুত তাহরীরের মাঠ পর্যায়ের সদস্যদের কাজে লাগানো হচ্ছে। পাকিস্তানে অবস্থানকারী জেএমবির স্বঘোষিত আমির ইজাজ আহমেদের পরিকল্পনায় এমন আরো ভয়াবহ ছক কষে ইতোমধ্যে সংগঠিত আইএস মতাদর্শের জঙ্গিরা।
এ বিষয়ে ডিবির উপ-কমিশনার (ডিসি) শেখ নাজমুল আলম বলেন, ‘আইএসআইএস’র অর্থে মারাত্মক অস্ত্র সংগ্রহ করে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে ক্ষতিসাধন, হুমকি সৃষ্টি ও খেলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই গ্রেপ্তার জঙ্গি সদস্যদের একমাত্র লক্ষ্য।’
তিনি আরো বলেন, ‘আইএস মূলত জেএমবির সক্রিয় সদস্যদেরকে নাশকতার কাজে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সাখাওয়াতুল কবির ২০০৬ সালে জেএমবি নেতা এজাজের হাত ধরে জেএমবিতে আসেন। সম্প্রতি পাকিস্তানে পুলিশের অভিযানে আইএস এর যে জঙ্গি নিহত হয় সেখানে চারজন বাংলাদেশি ছিল। সেখানে নিহত শামীম সাখাওয়াতুল কবিরের ভায়রা। আর এজাজ ওরফে কারগিল হচ্ছেন বর্তমানে জেলে থাকা মাওলানা সাঈদুর রহমানের মেয়ের জামাই।’
ডিবি সূত্র জানায়, গত রোববার যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা এলাকা থেকে চার জঙ্গি সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরা হলেন, সাখাওয়াতুল কবির ওরফে কবির, আনোয়ার হোসেন ওরফে বাতেন, রবিউল ইসলাম ও নজরুল ইসলাম। গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে সাখাওয়াত বাংলাদেশে আইএস এর প্রধান সমন্বয়ক বলে দাবি ডিবির। বাকি তিনজন তার সহকারী। তাদের কাছ থেকে জিহাদি লিফলেট, জঙ্গি প্রশিক্ষণ ভিডিও, ৩টি ল্যাপটপ, ৮টি মোবাইল ফোন, ২টি সিপিইউসহ কম্পিউটার সরঞ্জাম, সাখাওয়াতুল কবিরের নামে ইস্যুকৃত পাসপোর্ট ও পাসপোর্টের ফটোকপি এবং পাকিস্তান দূতাবাসের ভিসার আবেদন উদ্ধার করা হয়। গত সোমবার থেকে আসামিদের পাঁচদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে সাখাওয়াতুল কবির বাংলাদেশে আইএস এর সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোর জন্য সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছিলেন। নজরুল ইসলাম ছিলেন অর্থের যোগানদাতা। অপর দুজন ছিলেন এ দুজনের সহযোগী।
সাখাওয়াত জিজ্ঞাসাবাদে ডিবিকে জানান, অনেক ভেবেচিন্তে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই তারা বোমা হামলার ছক করে সংগঠিত হচ্ছেন। তারা গ্রেপ্তার হলেও মাঠ পর্যায়ে এখনও কমপক্ষে পাঁচশ আইএস সদস্য রয়েছে। এদের বেশিরভাগ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা এমনকি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের সদস্যও রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই তাদের আত্মঘাতী স্কোয়াডের সদস্য। দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটবে। এতে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হবে। আর এতেই স্বার্থ হাসিল হবে তাদের। ঠিক যেভাবে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে নাশকতা চালিয়ে অবস্থান নিয়েছে তারা। আর বাংলাদেশ আইএস সংগঠিত মূলত ‘জামায়াত-শিবিরের’ সহযোগিতায়। সেখানে জামায়াত শিবির তাদের সহযোগিতা করছে। তা ছাড়া বর্তমান সরকারের কারনে তাদের অনেক নেতা ও সদস্য দেশ ছাড়া। একই অবস্থা জামায়াতসহ তাদের মতাদর্শের লোকজনের।
ডিবি সূত্র জানায়, সাখাওয়াতুল কবির পাকিস্তানে আইএস-এর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং বর্তমানে বাংলাদেশের আঞ্চলিক কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় নাশকতা সৃষ্টি করে এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হত্যা করে বিশ্ব মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করা। যদি তারা এগুলোতে ব্যর্থ হন, তবে তারা তুরস্ক হয়ে সিরিয়াতে যুদ্ধ করতে যাবেন।
অন্যদিকে অন্তত ৩৬০ জন আইএস জঙ্গি ঢুকেছে বলে খবর পাওয়ার পরে বাংলাদেশের গোয়েন্দা ও র‍্যাব (র‍্যার্পিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন) এখন দেশজুড়ে অভিযানে নেমেছে বলে খবর প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার।
ঢাকার যাত্রাবাড়ী ও খিলক্ষেত থেকে সন্দেহভাজন চার আইএস জঙ্গি গ্রেফতার সে অভিযানেরই অংশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে বাংলাদেশে জঙ্গিদের সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা সাখায়াতুল কবির পাকিস্তানে আইএস জঙ্গিদের শিবিরে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে সদস্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
খবরটিতে উল্লেখ, আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে খবর এসেছে, টঙ্গীর তুরাগতীরে ধর্মীয় সম্মেলন বিশ্ব ইজতেমার সুযোগেই পাকিস্তান হয়ে আইএস জঙ্গিরা বাংলাদেশে ঢুকেছে। নাশকতা ছাড়া দেশের শীর্ষ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাকে খুনের লক্ষ্যও রয়েছে জঙ্গিদের।
আনন্দবাজার পত্রিকার খবরটিতে আরো বলা হয়, পাকিস্তান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ভারতেও অন্তত ৬৫০ জন আইএস জঙ্গি ঢুকেছে বলে গোয়েন্দা তথ্যে জানানো হয়। ধৃত জঙ্গিরা জানিয়েছে, এখান থেকে সদস্য সংগ্রহ করে পাকিস্তান হয়ে সিরিয়া ও ইরাকে ঢুকে লড়াই করাও ছিল তাদের লক্ষ্য।
দুই দফায় ইজতেমার সময়ে আইএস জঙ্গিরা ঢুকতে পারে বলে আগে থেকেই সতর্কবার্তা পেয়েছিল গোয়েন্দা বিভাগ। এ জন্য এবার বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু তার মধ্যেই অন্তত ৩৬০ জন জঙ্গি ঢুকে পড়েছে বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। তার পরই অভিযান শুরু হয়েছে।
নিউজ ডেস্ক

0 comments:

Post a Comment

 
Copyright © 2014 News N Fun
Shared by: MS Design